মোঃ আব্দুল্লাহ, স্টাফ রিপোর্টার
আজ ১৯/০৪/২৫ ইং, বেলা সাডে ১১ টার সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের চাঁপাই বাজারে ৪ জন মাদ্রাসা ছাত্রকে অপহরনের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়। বয়স আনুমানিক ৮ থেকে ১০ এর মধ্যে।
বাচ্চাগুলোর ঠিকানা:- মুস্তাকিম (৮) পিতা তোহিদুল, শাহাদাত (৯) পিতা রুহুল আমিন, তাহসিন (১০) পিতা শরিফুল, সোলাইমান (১০) পিতা মিলন। উভয়ের গ্রাম:- সাহেবগ্রাম, চৌডালা, গোমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এবং তারা সবাই সেখানকার স্থানীয় নূরে মাদীনা হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র।
বাচ্চাদের দেওয়া তথ্য মতে, তারা বাসা থেকে সকালের নাস্তা করে মাদ্রাসা যাওয়ার পথে এক ভ্যান ওয়ালা তাদের গাড়িতে উঠিয়ে নেই। জিজ্ঞাসা করে তোমরা কোথাই যাবা? ছাত্ররা বলে মাদ্রাসা যাবো, ভ্যান ওয়ালা বলে চলো সেখানে তোমাদের নামিয়ে দিবো। বলে ছেলেগুলো গাড়িতে উঠে যায়।
কিন্ত মাদ্রাসার দিকে না গিয়ে যখন গোমস্তাপুর দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রোডে চলে যেতে লাগে, তখন বাচ্চারা জিজ্ঞেস করে কোথাই যাচ্ছেন? বলে তোদেরকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পার্কে ঘুরতে নিয়ে যাবো। বলে যা খাবি, খাওয়াবো, যত টাকা নিবি তোদের কে দিবো। বলে গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুর বাজারে নিয়ে চলে আসে। সেখানে এসে নামিয়ে দিয়ে বলে ভাড়া দে, বাচ্চাদের কাছে কোন টাকা না থাকায় বলে টাকা নেই কিভাবে ভাড়া দিবো? বলে দোকানদারদের কাছ থেকে টাকা তুলে হলেও ভাড়া দিবি, তা না হলে তোদের কে মারবো, বিক্রি করে দিবো।
ছেলেগুলো তখন দোকানদারদের নিকট গেলে ভ্যান ওয়ালা তাদের রেখে পালিয়ে যায়।
এতে বাচ্চারা ভয় পেয়ে যায়, রাস্তা ভুলে যায়, কথার খেয় হারিয়ে ফেলে। এক দোকানদার তাদের ৩০/৪০ টাকাও দেয়।
এমত অবস্থায় মহিপুর থেকে এক অটো গাড়িতে চাঁপাই যাবো বলে গাড়িতে উঠে যায়, কিন্ত অটো ড্রাইভার বলে তোমরা কোন চাঁপাই যাবা?? নয়াগোলা শহর চাঁপাই?? না ঘুঘুডিমার পর পলশা চাঁপাই?? বাচ্চারা বলে এই চাঁপাই (ঘুঘুডিমার পরে চাঁপাই)। তারা আসলেই এইসব এলাকার কিছুই চিনেনা। ভয়ে/কথায় খেয় হারিয়ে ফেলে উল্টা পাল্টা বলে।
যখন চাঁপাই বাজারে বাচ্চাগুলোকে নামিয়ে দেয়, তখন গোবরাতলা ইউনিয়ন আনসার ও ভিডিপি দলনেতা মোঃ এমাজুল ইসলাম ফুয়াদ এবং গোবরাতলা ইউনিয়ন জামায়াতের টিম সদস্য শহীদুল্লাহ আব্বাসী বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করে কোথাই যাবা? বলে পার্কে যাবো! তখন তারা বলে এখানে তো পার্ক নেই। তখন অটো ড্রাইভার চলে যেতে উদ্যত হলে, তাকে আটকিয়ে বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করে, তখন বিস্তারিত বলে।
কিন্ত সেই অটো ড্রাইভারের কোন দোষ খুঁজে না পেলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে বাচ্চাদের তথ্য মতে ধারনা করা হচ্ছে, মুলত ভ্যান ওয়ালা অপহরণের উদ্দেশ্যে তাদের নিয়ে এসেছিলো। কিন্ত কোন ব্যবস্থা না করতে পেরে হয়তো তাদেরকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এমত অবস্থায় গোবরাতলা ইউনিয়ন আনসার ও ভিডিপি দলনেতা মোঃ এমাজুল ইসলাম ফুয়াদ এবং গোবরাতলা ইউনিয়ন জামায়াতের টিম সদস্য শহীদুল্লাহ আব্বাসী তাদের উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে গোবরাতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা আকবর আলীর সহযোগিতায় সেখানকার এক ভাইয়ের ( এরশাদুল হক সোহেল) সাথে যোগাযোগ হয়। তার মাধ্যমেই সরাসরি তাদের মাদ্রাসার সেক্রেটারী আব্দুল মান্নান এবং মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ শরিফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ হয় এবং কথা হয়।
মাদ্রাসার সেক্রেটারী আব্দুল মান্নান মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ শরিফুল ইসলামকে গোমস্তাপুর বাজার পাঠালে সেখানে গোবরাতলা ইউনিয়ন জামায়াতের টিম সদস্য শহীদুল্লাহ আব্বাসী এবং চাঁপাই বাজারের আওয়াল ডেকোরেটারের মালিক আব্দুল আওয়াল চাঁপাই বাজার থেকে নিয়ে গিয়ে হাফেজ শরিফুল ইসলামের হাতে তুলে দিয়ে আসেন।