নিউজ ডেক্স
সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমাবার। এই দিনে জুমা ছাড়াও অন্যান্য ইবাদতের বিনিময়ে বিপুল সওয়াব রয়েছে। জুমার নামাজ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে একটি সুরাও রয়েছে। রাসুল (সা.)-এর অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
জুমার নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম জুমা আদায় করেন। কিন্তু অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেক সময় জুমার ক্ষেত্রে কিছু ভুলত্রুটি হয়ে যায়। সে রকম পাঁচটি ভুল নিয়ে আজকের সংক্ষিপ্ত আলোচনা-
পরিচ্ছন্ন না হয়ে জুমায় যাওয়া
জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করা জরুরি। অনেকে এই দিনে এত বেশি ব্যস্ত থাকেন যে, কোনো রকম জুমার ফরজ দুই রাকাত আদায় করে চলে আসেন। অথচ আবু সাইদ খুদ্রি (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি এ মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য গোসল করা ওয়াজিব (জরুরি)। আর মিসওয়াক করবে এবং সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে। ’ (বুখারি, হাদিস: ৮৮০, মুসলিম, হাদিস: ৮৪৬)
তাই সবার উচিত জুমার দিন গোসল করা এবং মিসওয়াক করা। যদি সামর্থ্য থাকে, সুগন্ধি ব্যবহার করা। এছাড়াও ভাল ও পরিচ্ছন্ন জামা পড়ে মসজিদে যাওয়া। রাসুল (সা.) নিজেও এই দিন ভাল ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরতেন।
মসজিদে দেরি করে যাওয়া
জুমার নামাজ কেবল দুই রাকাত নামাজ আদায়ে যথেষ্ট নয়। জুমার খুতবা শোনাও জরুরি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবাত (সহবাস পরবর্তীকালে) গোসলের মতো গোসল করে এবং নামাজের জন্য আগমন করে, সে যেন একটি উট কোরবানি করলো। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে, সে যেন একটি গাভী কোরবানি করলো। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে, সে যেন একটি শিং-বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানি করলো। চতুর্থ পর্যায়ে যে আগমন করলো সে যেন একটি মুরগি কোরবানি করলো। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করলো, সে যেন একটি ডিম কোরবানি করলো। (বুখারি, হাদিস: ৮৮১)
তাই জুমার নামাজের দিন পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া উত্তম। তাহলে সময়মতো ও সঠিকভাবে নামাজ আদায় সম্ভব।
জুমার নামাজের সময় অন্য কাজ করা
জুমার নামাজের সময় অন্য কাজ করা নিষিদ্ধ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মসজিদের দিকে যাওয়া জরুরি। জুমার প্রথম আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায় কিংবা অন্য কাজ বন্ধ করে দেওয়া অথবা নামাজের জন্য বিরতি দেওয়া উচিত। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাইদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, আয়েশা (রা.) বলেছেন, লোকজন নিজেদের কাজকর্ম নিজেরাই করতেন। যখন তারা দুপুরের পরে জুমার জন্য যেতেন, তখন সে অবস্থায়ই চলে যেতেন। তাই তাদের বলা হলো, যদি তোমরা গোসল করে নিতে ভালো হতো...। (বুখারি, হাদিস: ৯০৩, মুসলিম, হাদিস: ৮৪৭)
মনোযোগ দিয়ে খুতবা না শোনা
খুতবা শোনা জুমার নামাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই ঠিকভাবে খুতবা শোনাও জরুরি। তবে যদি মুসল্লি বেশি হওয়ার কারণে অথবা অন্য কোনো কারণে খুতবার আওয়াজ না শোনা যায়, তবে নিরব থাকা নিয়ম।
আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমভাবে ওজু করে জুমার নামাজে এলো, নীরবে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনলো, তাহলে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং আরও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি (অহেতুক) কঙ্কর স্পর্শ করলো, সে অনর্থক, বাতিল, ঘৃণিত ও প্রত্যাখ্যানযোগ্য কাজ করলো। (মুসলিম, হাদিস: ১৮৭৩)
প্রসঙ্গত আরবি ও বাংলায় দেওয়া উভয় খুতবাই মনোযোগ দিয়ে শোনা জরুরি।
খুতবার সময় কথা বলা
খুতবা শোনা ওয়াজিব। রাসুল (সা.) খুতবার সময় কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে চুপ থাকো বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে। (বুখারি, হাদিস: ৯৩৪, মুসলিম, হাদিস: ৮৫১)
খুতবার সময় কেউ কথা বললে তাকে চুপ থাকতে বলাও উচিত নয়। অর্থাৎ খুতবার সময় মুখ পুরোপুরি বন্ধ রাখা চাই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে জুমার নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ গোলাম জাকারিয়া , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ আব্দুল্লাহ স্থায়ী ঠিকানা : বৈশাখী টাওয়ার, বাড়ি নং-৫৬, রোড নং-১৬ ,সেক্টর-১১, উত্তরা, ঢাকা বাংলাদেশ। লোকাল অফিসঃ বেহুলা, গোবরাতলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
ইমেইল : 𝐝𝐜𝐛𝐭𝐯𝟐𝟒@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦 মোবাইল নম্বর : ০১৩০৩-৪৪৭০৭৭
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত